• +91 9734025990   
  • aisjamayat@gmail.com   

President Message





মুফতী আব্দুল কাইউম সাহেবের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
জন্ম- ৯ই কার্তিক ১৩৭২, রাত্র ১০.০২ মিনিট, মঙ্গলবার। নাম- মুহাম্মাদ আব্দুল কাইউম, পিতা- মুহাম্মাদ শামছুর রহমান, মাতা- মোছাঃ ফতেমা খাতুন। জেলা- উত্তর ২৪ পরগণা, বশিরহাট মহাকুমার অন্তর্গত বাদুড়িয়া থানার পদ্মপুকুর গ্রামে নানার ঘরে ভূমিষ্ঠ হয়। পিতৃভূমি- বৈকারা, পোষ্ট- আড়বালিয়া, থানা- বাদুড়িয়া, জেলা- উত্তর ২৪ পরগণা।
নামকরণঃ পিতা হাফেজ শামসুর রহমান সাহেব বশিরহাট আল্লামা রুহুল আমিন রহঃ -এর একজন পূর্ণ অনুসারী ভক্ত, ফলে বরকতের উদ্দেশ্যে হুজুরের নামে নাম করণ করে নাম রেখেছিলেন মুহাম্মাদ রুহুল আমিন। পরবর্তিতে আল্লামা বজলুর রহমান দরগাহপুরী রহঃ- এর নির্দেশে "মুহাম্মাদ আব্দুল কাইউম" নাম করন করা হয়।
পাঠ্যজীবনঃ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য গ্রাম্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। শিশু শ্রেণী পড়ার শেষে সমকালীন ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে প্রথম স্থান লাভ করতেন। একদিকে প্রাইমারী স্কুলে পড়তেন অপর দিকে আব্বা মায়ের কাছেও আরবী পড়াশুরু করেন। অল্প দিনের মধ্যে আরবী বাগদাদী কায়দা পড়ে ইয়াসসার নাল কুরআন (তখন সবে উক্ত বইটি দেশে আত্ম প্রকাশ করেছে) পড়া সম্পন্ন করে আব্বার কাছেই আম্মা পারা পড়া সম্পন্ন করে কুরআন শরীফ আব্বা (মরহুম আলহাজ্ব হাফেজ শামসুর রহমান রহঃ) কাছেই প্রথম শুরু করেন। ‘জ্ঞানীরা বলেন, মায়ের শিক্ষা আগে হলে, শিশুর শিক্ষা মায়ের কোলে।
টোনা মসজিদের তৎকালিন ইমাম দো-গাছিয়া নিবাসী আলহাজ্ব হাফেজ আব্দুল খালেক সাহেবের নিকট হিফজ শেষ করেন। হিফজ সম্পূর্ন হওয়ার পর তিনি চৈতা মাদ্রাসায় মাওলানা বিভাগে পড়াশুনা শুরু করেন ১৯৮৩ সালে বিথারী সিনিয়র মাদ্রাসায় পাঞ্জামে ভর্তি হন। ১৯৮৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা এ্যডুকেশন বোর্ডে আলেম পরিক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে ২য় স্থান অধিকার করেন।
১৯৮৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা এ্যডুকেশন বোর্ড থেকে ফাজিল পরিক্ষা দিয়ে সেখানে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে ২য় স্থান অধিকার করেন। ১৯৮৯ সালে আদিবে কামিল, ১৯৯০ সালে মুমতাজুল মুহাদ্দিসিন, এবং ১৯৯১ সালে মুমতাজুল ফুকাহ (মুফতী) সম্পূর্ন করেন কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা কলেজ থেকে।
শিক্ষক- মুফতী আব্দুল কাইউম সাহেবর শিক্ষকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, পিতা আলহাজ্ব হাফেজ শামসুর রহমান সাহেব, হাফেজ নুরুজ্জামান সাহেব, হাফেজ আব্দুল খালেক সাহেব, মাওলানা কমরুদ্দিন সাহেব, মাওলানা হিফজুর রহমান সাহেব, মাওলানা আব্দুস সালাম সাহেব, মাওলানা ক্বারী আবুল কাশেম সাহেব প্রমুখ্য।
শিক্ষকতার জীবন- ১৯৯১ সালে শিক্ষক হিসাবে বাদুড়িয়া আনারপুর মাদ্রাসাতে নিযুক্ত হন। ১৯৯৩ সালে থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত টানা ১৭ বছর তিনি বসিরহাট আল্লামা রুহুল আমিন রহঃ- এর প্রতিষ্ঠিত ‘আমিনিয়া মাদ্রাসা’-তে শিক্ষকতা করেছেন।
২০১২ সালে ফেব্রুয়ারীতে কলকাতা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থিওলজি (হাদীস- তফসির) বিভাগের অতিথি অধ্যপক হিসাবে নিযুক্ত হন। ২০১৮ সালে ৪ ঠা জুলাই নিজের ইচ্ছায় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যপকের পদ থেকে ইস্তেফা দেন। তারপর বদ্ধ গোলামী থেকে মুক্তি পেয়ে স্বস্তির সঙ্গে জাতীয় সেবায় ও সমাজের চলমানকর্মে সর্বপরি জামিয়া রহমানিয়ার উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করেন।
২০০৯ সালে ২০ শে ডিসেম্বর অল ইন্ডিয়া সুন্নাত অল জামায়াতের পরিচালনায় "আল্লামা রুহুল আমিন স্মৃতি" - জামিয়া রহমানিয়া প্রতিষ্ঠা করা হয়। উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান পরিচালক ও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
ফুরফুরা সিলসিলার খিতমতে মুফতী আব্দুল কাইউম সাহেব। ফুরফুরা সিলসিলার জন্য কি কি করেছেন ?
(১) দেশে যখন উত্তরপ্রদেশ থেকে আগত একশ্রেণীর ওলামারা ফুরফুরা সিলসিলার অস্তিত্ব বিলোপ করতে উঠেপড়ে লেগেছিল এবং নানা অপপ্রচারের ভিতর দিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছিল, এমনকি কোনো একজন লেখক একটি বই লিখে দাদাহুজুর পীরকেবলা রহঃ এবং তাঁর প্রধান খলিফা বসিরহাট আল্লামা হুজুরকে ভ্রান্তির ভীতরে পতিত বলে অপবাদ দিয়ে লিখেছিলেন, যদি দেওবন্দীদের কেতাব না পড়তো তাহলে ফুরফুরারা আলেম হতে পারতো না। ঠিক সেই সময় তাদের যুক্তি গুলোকে খন্ডন করে ফুরফুরার হাতিয়ার নামক কেতাব রচনা করে ফুরফুরা সিলসিলার অস্তিত্ব ও মর্যাদা রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন মুফতি আব্দুল ক্বাইউম সাহেব!!
(২) যখন তবলিকরা সিলসিলাকে শেষ করার জন্য তাদের নিজস্ব কায়দায় ধর্ম প্রচার করছিল তখন মুফতি আব্দুল ক্বাইউম সাহেব মেজো হুজুরের লেখনী ৬ ধারা তবলিগ জামায়াত জায়েজ কিনা কেতাব খানা প্রকাশ করে সিলসিলার অনুসারীদের চোখ খুলে দিয়েছিলেন!
(৩) যখন বাসন্তীতে বাহাস হয়েছিল তখন ফুরফুরার পক্ষ থেকে আজিজুল হক কাসেমীর মত আলেমকে মুখ বন্ধ করে দিয়েছিলেন মুফতি আব্দুল ক্বাইউম সাহেব!
(৪) এদেশের কিছু মানুষ যখন আজানের পর হাত তোলা নাজায়েজ, কেয়াম করা যাবে না, ইছালে ছওয়াব করা যাবে না, আখেরী জোহর বেদাত, কবর জিয়ারাত চলবে না বলে ফতোয়াবাজি করছিল, তখন মুফতি আব্দুল ক্বাইউম সাহেব "দালাইলে ফুরফুরা" নামক কেতাব লিখে ফুরফুর ইজ্জত রক্ষা করেছিলেন।
(৫) শিমুলদহে বিরোধী বক্তারা যখন সিলসিলার বক্তাদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছিল তখন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ৪ ঘন্টা বক্তৃতা করে সিলসিলার ঐতিহ্য রক্ষা করেছিলেন মুফতি আব্দুল ক্বাইউম সাহেব!
(৬) নদীয়া জেলার মিত্রপুরে সিলসিলাকে নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য বিরোধী বক্তারা যখন বক্তৃতা রাখলো তখন সেই মারমুখী পরিস্থিতিতে সিলসিলার পক্ষে বক্তৃতা দিয়ে সিলসিলার ভীত রক্ষা করেছিলেন মুফতি আব্দুল ক্বাইউম সাহেব।
(৭) আহলে হাদীসরা যখন হানাফি মাযহাব নস্যাৎ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল তখন মুফতি আব্দুল ক্বাইউম সাহেব হেদায়েতুল মুফসিদিন, দালায়েলুল মুকাল্লিমুন, হানাফি ও লা মাযহাবী দের পার্থক্য নামক কেতাব লিখে মানুষের চোখ খুলে দিয়েছিলেন!
(৮) আল্লামা হুজুরের উচ্চ চিন্তায় লিখিত কেতাব এবং সুচিন্তিত মতামত গুলি বাঙালী ছাড়া অন্যদের জানার সুযোগ নেই। আমরা উর্দু,হিন্দি শিখি কিন্তু হিন্দি এবং উর্দুভাষীরা বাংলা শেখে না ফলে বাংলার লেখনী সম্পর্কে তারা অন্ধকারে তাই হুজুরের লিখিত ""আখেরী জোহর ও দল্লিন ও জল্লিনের মীমাংসা "বইদুটি উর্দু করে উর্দুভাষীদের জন্য ছেপে প্রকাশ করেছিলেন মুফতি আব্দুল ক্বাইউম সাহেব!!
(৯) মুফতি সাহেব যখন হজ্বে গিয়েছিলেন ঠিক তখন প্রায় শতাধিক বাঙালী হাজীদেরকে নিয়ে আলোচনা সভার মজলিস তৈরী করা হয়,সেখানে তিনি ঘন্টাখানেক আলোচনা করেন এবং তারপর সিলসিলার মতে সালাম কেয়াম করতে থাকেন, তারপর সৌদি সরকারের কোনো এক গুপ্তচর, বাংলাদেশী আলেম কেয়াম কে শিরক ও বিদয়াত এবং জাহান্নামের কাজ বলে গলাবাজারি করছিল ঠিক সেইসময় সৌদিতে তার সাথে তর্ক করে ফুরফুরা সিলসিলার মাথা উচু করেছিলেন মুফতি আব্দুল ক্বাইউম সাহেব!
(১০) বাংলার ছেলেরা যখন সিলসিলায়ে ফুরফুরা মতাদর্শে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান না পেয়ে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ পাড়ি জমাচ্ছিল পড়াশুনার জন্য এবং সেখান থেকে ফিরে এসে দাদাহুজরের বিরুদ্ধে ফতোয়াবাজি করছিল ঠিক সেই সময় সিলসিলায়ে ফুরফুরা শরীফের মতাদর্শে জামিয়া রহমানিয়া নামক প্রতিষ্ঠান করে কিছুটা হলেও ইজ্জত রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন।
জামিয়া রহমানিয়া পশ্চিমবঙ্গের এক ব্যতিক্রম ধর্মী ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়। দাওরায়ে হাদীস, দাওরায়ে ক্বুর-আন সহ ইফ্তা, ক্বেরাত, আদব শিক্ষার অদ্বিতীয় শিক্ষা কেন্দ্র। কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সহ ১০ হাজার দুষ্প্রাপ্য পুস্তকের লাইব্রেরী। শাইখুল হাদীস মুফতী মুহাম্মাদ আব্দুল কাইউম সাহেব এর নেতৃত্বে ১৪ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হয়ে আসছে।
কেতাব রচনা:
১। ইসলাম বনাম রেডিও টিভি
২। তীব্র প্রতিবাদ
৩। ফুরফুরার হাতিয়ার
৪। দেওবন্দীদের কতিপয় ভ্রান্ত মতবাদ ও তার রদ
৫। আধুনিক যন্ত্রের শরয়ী সমাধান
৬। শরীয়তের দীষ্টিতে দাড়ি
৭। জাহান্নাম ও জাহান্নামী
৮। দালাইলে ফুরফুরা
৯। তালাকের বিস্তারিত মাছায়েল
১০। রোজার বিস্তারিত মাছায়েল
১১। বাসন্তীর বাহাছ
১২। ফজরের ওয়াক্ত কখন হয়
১৩। খ্রীষ্টানী মতবাদ ও কুরআনী জবাব
১৪। দালাইলুল মুকাল্লিদীন আলা তরদীদিল মুখালিফিন
১৫। দালাইলে ফুরফুরা দ্বিতীয় ভাগ
১৬। ভ্রান্তির বেড়াজালে
১৭। ইসবাতুত তাওহীদ
১৮। উপাধি কি ও কেন?
১৯। তিন তালাক কি অ-সংবিধানিক?
২০। ফায়সালা
২১। নাজাতুত দুনিয়া অল আখেরাহ
২২। বোখারী প্রসঙ্গে
২৩। আখেরী জোহর
২৪। সুন্নাত অল জামায়াতেরস উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি
২৫। দোওয়া ও মোনাজাত
২৬। হেদায়েতুল মুফসিদীন
২৭। হানাফি ও লা মাজহাবীদের মতবাদ
২৮। লিবাছুস ছলেহীন
২৯। ইজহারুল হক
৩০। এস সঙ্গে তিন তালাক।